আল-কুরআন এর মৌলিক বিষয়


আল্লাহ রব্বুল আল-আমীন তার শেষ নবীকে কিতাব দিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন তিনটি বিষয় দিয়ে।

(১) হেদায়েত (পথ নির্দেশনা)
(২) সত্যদ্বীন (জীবন-বিধান)
(৩) জিহাদ (সত্যদ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম)

তিনিই তাঁর রসূলকে হেদায়েত ও সত্য ধর্মসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেন। সত্য প্রতিষ্ঠাতারূপে আল্লাহ যথেষ্ট। (সুরা ফাতাহ ২৮)



তিনিই প্রেরণ করেছেন আপন রসূলকে হেদায়েত ও সত্য দ্বীন সহকারে, যেন এ দ্বীনকে অপরাপর দ্বীনের উপর জয়যুক্ত করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপ্রীতিকর মনে করে। (সুরা তওবা ৩৩)

তিনি তাঁর রসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্যধর্ম নিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে একে সবধর্মের উপর প্রবল করে দেন যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে। সুরা ছফ ৯)।

কুরআনও ঠিক এই তিনটি বিষয় নিয়েই গঠিত। যেমন-

১. হেদায়েত ঃ তাওহীদ হচ্ছে আল্লাহ সার্বভৌমত্ব। অর্থাৎ জীবনের সর্বক্ষেত্রে একমাত্র ইলাহ বা হুকুমদাতা হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ । জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যেখানে আল্লাহ এবং তার রসুলের কোন আদেশ বা নিষেধ আছে সেখানে অন্য কারো আদেশ বা নিষেধ না মানা। এটাই হচ্ছে কালেমা- লা ইলাহা ইল্লাল্লহ, মুহাম্মাদুর রাসুল আল্লাহ (সাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম) - নাই কোন উপাস্য, আল্লাহ ছাড়া এবং মোহাম্মদ (সাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রসুল।

২. সত্যদ্বীন ঃ সত্যদ্বীন হচ্ছে তাওহীদের উপর ভিত্তি করে গঠিত শরীয়াহ বা জীবনব্যবস্থা। শরীয়াহ হচ্ছে প্রত্যেকটি মানুষের জন্য আইন-কানুন, দন্ডবিধি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, পারিবারিকনীতি, জায়েজ, না-জায়েজ, হালাল-হারাম ইত্যাদি। ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত জীবনে আললহর দেওয়া এই সত্যদ্বীন (জীবনব্যবস্থা) মেনে চলতে হবে। এখানে নিজের বা অন্যের তৈরী কোন বিধি-বিধান (যা কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী না) মানা যাবে না।

৩. জিহাদ ঃ তাওহীদ ভিত্তিক এই সত্যদ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সব ধরণের চেষ্টাই (নবী সাঃ ও খোলাফায়ে রাশেদ্বীন এর দেখানো পথ ও পন্থা) হচ্ছে জিহাদ (সংগ্রাম)। আল্লাহকে একমাত্র হুকুমদাতা হিসাবে মেনে নিয়ে তার দেওয়া জীবনব্যবস্থা অনুযায়ী ব্যক্তিগত এবং সমষ্টিগত জীবন পরিচালিত করা এবং এই জীবনব্যবস্থা সমষ্টিগত জীবনে প্রতিষ্ঠিত রাখার বা করার জন্য নিজের জান ও মাল দিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াই হচ্ছে জিহাদ।

আল-কুরআন বাণীঃ

হে মুমনিগণ, আমি কি তােমাদরেকে এমন এক বানজ্যিরে সন্ধান দবি, যা তােমাদরেকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থকেে মুক্তি দেবে? তা এই য়ে তােমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলরে প্রতি বশ্বিাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জিহাদ করবে এটাই তােমাদের জন্যে উত্তম; যদি তােমরা বােঝ। তিনি তােমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং এমন জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং স্থায়ী বসবাসের জন্য জান্নাতে উত্তম বাসগৃহ। এটা মহাসাফল্য। এবং আরও একটি অনুগ্রহ দিবেন, যা তােমরা পছন্দ কর। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বজিয়। মুমনিদরেকে এর সুসংবাদ দান করুন। (সুরা সফ্-১০-১৩)

রাসুল (সাঃ) এর বাণীঃ

আহমদ ইব্ন ইউনুস ও মূসা ইব্ন ইসমা’ঈল (র) ....... আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্(সা) কে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘কোন্ আমলটি উত্তম?’ তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান আনা।’ প্রশ্ন করা হল, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।’ প্রশ্ন করা হল, ‘তারপর কোনটি।’ তিনি বললেনঃ ‘মকবূল হজ্জ।’ (সহিহ বুখারী :: ঈমান অধ্যায়)

আবু বকর ইবনআবু শায়বা ও যুহায়র ইবন হারব (রাঃ) উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি -লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ--এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইন্তিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে (সহিহ মুসলিম :: কিতাবুল ঈমান অধ্যায়)

উপরে আলোচিত আল্লাহ প্রদত্ত এই তিনটি বিষয় নিয়েই পরিপূর্ণ ইসলাম। আল্লাহ রব্বুল আল-আমীন তার কুরআনও এই তিনটি বিষয় দিয়েই নাজিল করেছেন। আর এই তিনটি বিষয়ের বাইরে কুরআনে অন্য কোন বিষয় নাই। কুরআনের যে কোন বিষয়ই হোকনা কেনো এই তিন এর মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার ও সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন। আমীন

No comments: